ফ্রীডম্যানের অর্থের পরিমাণ তত্ত্ব/অর্থের আধুনিক পরিমাণ তত্ত্ব/শিকাগো মতবাদ

ফ্রীডম্যানের অর্থের পরিমাণ তত্ত্ব/অর্থের আধুনিক পরিমাণ তত্ত্ব/শিকাগো মতবাদ (Friedman’s Quantity Theory of Money/Modern Quantity Theory of Money/Chicago Approach)

আধুনিক অর্থনীতিবিদ Milton Friedman অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে যে বক্তব্য প্রদান করেন, তাই সামষ্টিক অর্থনীতিতে অর্থের আধুনিক পরিমাণ তত্ত্ব নামে পরিচিত। Friedman মূলত অর্থের পরিমাণ সংক্রান্ত Classical বক্তব্যের দোষত্রুটি দূর করে একটি পরিমার্জিত বক্তব্য প্রদান করেছেন যা অর্থের আধুনিক পরিমাণ তত্ত্ব নামে পরিচিত। তাছাড়া Friedman আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন, তাই ফ্রীডম্যানের তত্ত্বকে আবার শিকাগো মতবাদও বলা হয়।


Chicago Approch

Milton Friedman প্রথমে অর্থের চাহিদার নির্ধারকগুলো ব্যাখ্যা করেছেন। পরবর্তীতে তিনি অর্থের যোগানের সাথে দামস্তরের সম্পর্ক স্থাপন করেন। এভাবে অর্থের চাহিদা এবং অর্থের যোগানের সমন্বয়ে আধুনিক অর্থের পরিমাণ তত্ত্ব গড়ে উঠেছে। ফ্রীডম্যানের আধুনিক পরিমাণ তত্ত্বকে বিশ্লেষণ করা যায় দু’ভাবে। যথাঃ



Share:

ওকান বিধি | Okan’s Law

প্রশ্নঃ ১। ওকান বিধি ব্যাখ্যা কর।

        ২। ওকান বিধি বা Okan's Law আলোচনা কর। 

যুক্তরাষ্ট্রের Yale University-র Professor এবং একসময়কার সে দেশের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা Arthar Okan প্রবৃদ্ধির হারের সাথে বেকারত্বের হারের সম্পর্ক নির্ণয় করতে গিয়ে যে নিয়ম ব্যাখ্যা করেন, তাঁর নামানুসারে সামষ্টিক অর্থনীতিতে সেটি ওকান বিধি (Okan’s Law) নামে পরিচিত। Okan এর মতে, GNP প্রবৃদ্ধির হারের সাথে বেকারত্বের হারের সম্পর্ক বিপরীত। অর্থাৎ, GNP প্রবৃদ্ধির হার বাড়লে বেকারত্বের হার কমবে এবং GNP প্রবৃদ্ধির হার কমলে বেকারত্বের হার বাড়বে। 

Okan Hypothetical ভাবে সম্পর্কটা ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতে, অন্যান্য অবস্থা স্থির থেকে GNP প্রবৃদ্ধির হার 3% বাড়লে বেকারত্বের হার 1% কমে এবং প্রবৃদ্ধির হার 3% কমলে বেকারত্বের হার 1% বাড়বে। অর্থাৎ ধরা যাক, প্রাথমিক অবস্থায় দেশে প্রবৃদ্ধির হার 10% এবং বেকারত্বের হার 10%। এখন GNP প্রবৃদ্ধির হার 10% থেকে বেড়ে 13% হলে বেকারত্বের হার 10% থেকে কমে 9% হয়। অন্যভাবে বলা যায়, প্রবৃদ্ধির হার 10% থেকে কমে 7% হলে বেকারত্বের হার 10% থেকে বেড়ে 11% হবে। এভাবে GNP প্রবৃদ্ধির হারের সাথে বেকারত্বের হারের বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান। এটাই Okan’s Law নামে পরিচিত। ওকান বিধি ব্যাখ্যা করার জন্য দুই ধরনের প্রবৃদ্ধি হারের কথা উল্লেখ করেছেন। যথাঃ Actual GNP প্রবৃদ্ধির হার ও Potential GNP প্রবৃদ্ধির হার। 

যদি Actual GNP প্রবৃদ্ধির হার এবং Potential GNP প্রবৃদ্ধির হার পরস্পর সমান হয় তবে দেশে যে বেকারত্ব বিরাজ করে, তাকে বলা হয় স্বাভাবিক বেকারত্বের হার। যদি Actual GNP প্রবৃদ্ধির হার Potential GNP প্রবৃদ্ধির হারের চেয়ে কম হয় তবে দেশে বেকারত্ব বাড়বে যাকে অস্বাভাবিক বেকারত্ব হার বলে। অন্যদিকে যদি Actual GNP প্রবৃদ্ধির হার Potential GNP প্রবৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি হয় তবে দেশে বেকারত্ব আস্তে আস্তে কমতে থাকে। তাই Okan যুক্তি দেখান যে, বেকারত্ব কমাতে হলে Actual GNP প্রবৃদ্ধির হার বাড়াতে হবে। নিম্নের চিত্রে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হলোঃ 

Okan's Law

চিত্রের OX অক্ষে সময় এবং OY অক্ষে প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে। AP হচ্ছে Potential GNP প্রবৃদ্ধির হার নির্দেশক রেখা এবং AY হচ্ছে Actual GNP প্রবৃদ্ধির হার নির্দেশক রেখা। চিত্রের A, B, C, D বিন্দুগুলোতে Potential GNP এবং Actual GNP প্রবৃদ্ধির হার পরস্পর সমান। তাই উক্ত বিন্দুগুলোতে স্বাভাবিক বেকারত্ব বিরাজ করছে। কিন্তু যদি Actual GNP, Potential GNP প্রবৃদ্ধির হারের চেয়ে কম হয় তবে দেশে বেকারত্ব বেড়ে যাবে যা ছায়াযুক্ত অঞ্চল দ্বারা বুঝানো হয়েছে। ওকানের যুক্তি হচ্ছে যে, এই অস্বাভাবিক বেকারত্ব কমাতে হলে Actual GNP প্রবৃদ্ধির হার বাড়াতে হবে।



Share:

GNP ব্যবধান | GNP Gap

প্রশ্নঃ ১। GNP ব্যবধান আলোচনা কর।

        ২। GNP ব্যবধান কী?

কোন দেশে একটি নির্দিষ্ট সময়ে উৎপাদনের সকল উপকরণ উৎপাদনকার্যে  নিয়োজিত থেকে যে পরিমাণ চূড়ান্ত পণ্য ও সেবাকর্ম উৎপাদন করে, তার আর্থিক মূল্যকে বাস্তব GNP বলে। অন্যদিকে, উৎপাদনের উপকরণসমূহ যথাযথ দক্ষতার সাথে উৎপাদনকার্যে নিয়োজিত করে যে পরিমাণ উৎপাদন লাভ করা যাবে বলে প্রত্যাশা করা হয়, তাকে প্রত্যাশিত বা অর্জনযোগ্য GNP (Potential GNP) বলে।

কোন নির্দিষ্ট বছরে একটি দেশে প্রত্যাশিত GNP এবং বাস্তব GNP এর মধ্যকার ব্যবধানকে বলা হয় GNP ব্যবধান। যদি Potential GNP এবং বাস্তব GNP পরস্পর সমান হয় তরে GNP ব্যবধান শূণ্যে পরিণত হয়। অন্যদিকে, উৎপাদনের উপকরণসমূহ ‍যদি যথাযথ দক্ষতার সাথে ব্যবহৃত না হয় তবে Potential GNP এর চেয়ে বাস্তব GNP বেশি হয়- সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও বাণিজ্যচক্রের ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। উচ্চহারে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায়।

সুতরাং Potential GNP এর চেয়ে বাস্তব GNP কম হলে মন্দা ও বেকারত্ব দেখা দেয় এবং Potential GNP এর চেয়ে বাস্তব GNP বেশি হলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। অন্যভাবে বলতে গেলে বলা যায়, GNP ব্যবধান বাড়তে থাকলে মন্দা দেখা দেয় এবং GNP ব্যবধান কমতে থাকলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। নিম্নে একটি চিত্রের সাহায্যে GNP ব্যবধান ধারণাটি ব্যাখ্যা করা হলোঃ

GNP Gap

চিত্রের OX অক্ষে সময় এবং OY অক্ষে Potential এবং Actual GNP ধরা হয়েছে। YPYP রেখা Potential GNP নির্দেশ করে এবং YAYA রেখা Actual GNP নির্দেশ করে। চিত্রে লক্ষণীয় যে, যখন Potential GNP এবং Actual GNP পরস্পর সমান তখন GNP ব্যবধান শূণ্য (0)। বাস্তবে এ ধরণের অবস্থা খুব একটা দেখা যায় না। ‍যদি Potential GNP এর চেয়ে Actual GNP বেশি হয়, তবে দেশে উচ্চহারে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিবে। অন্যদিকে, যদি Potential GNP এর চেয়ে Actual GNP কম হয়, তবে অর্থনীতিতে মন্দা ও বেকারত্ব ‍দেখা দেবে।



Share:

আমাদের সম্পর্কে

BTemplates.com

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
বিডি পড়াশোনা - “শিক্ষা বাণিজ্যকে না বলি”

ফেসবুক

সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ

সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ